হুনাফাদের গল্প (রাসূল সঃ এর জীবনী - ৭) - seerah

ভাই নামায তো পড়ি না! কি আর করবো বলেন? আল্লাহ তো হিদায়াত দিচ্ছেন না, আল্লাহ যেদিন থেকে হিদায়াত দিবে সেদিন থেকে বদলে যাবো ভাই! ৫ওয়াক্ত নামায পড়বো। আমাদের সময়ে এমন কথাগুলি নতুন কিছু না। এমনকি “আমার নিজের পরিবারেও এমন মানুষ রয়েছে” যারা নিজেদের নিষ্ক্রিয়তা, অলসতা আর গুনাহের ভার আল্লাহর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য এমন অজুহাত তৈরি করে। আসলে সত্যের কাছ থেকে এসব মানুষেরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, এজন্য তারা এমন অজুহাতের হাজারও দরজা বানিয়ে রেখেছে। তার মধ্যে একটি দরজা হলো: “আল্লাহ আমাকে হিদায়াত দিচ্ছেন না।” এই অজুহাত যে মিথ্যা আর হাস্যকর তা প্রমাণ করার জন্য একটা ঘটনাই যথেষ্ট।


আজ থেকে চৌদ্দশো বছর আগে সালমান নামের এক যুবক সত্যের সন্ধানে বাবার আদেশকে অমান্য করে ‘ভালো জব’ আর ‘আরামের ঘর’ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। এরপর হয়ে যান একজন সাদাসিধে ছাত্র। ভালো মানুষ দেখলেন, খারাপ মানুষ চিনলেন। তাক্বদীরের লিখনে ছাত্র থেকে হলেন দাস! 
  
কিন্তু সত্যের সন্ধানে তার যাত্রা চলছিল, চলছিল। তিনি শুধু জানতেন, কোনোভাবে আরবে আমাকে যেতে হবে, যেতেই হবে, সেখানে একজন নবী আসবেন! সত্যের সন্ধানে তিনি ঘুরে ফিরেছেন বছরের পর বছর। বয়স গড়িয়েছে, কিন্তু মনে কখনো বয়স ছাপ রাখতে পারে নি, আর শেষ পর্যন্ত আল্লাহ অদ্ভূতভাবে তার কাছে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত এনে দিলেন, মদীনায় এলেন সালমান দাস হয়ে, তার সামনে সেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যার সন্ধানে তিনি যুবক বয়সে বেরিয়ে পড়েছিলেন! 
  
তিনি হলেন সাহাবি সালমান আল-ফারিসি রাদিয়াল্লাহু আনহু। অসাধারণ এক মানুষ, অসাধারণ তার গল্প! সত্যের খোঁজে পথে পথে ফেরা জীবনের গল্প! শুধু মাত্র সত্যের সন্ধানে তিনি যুবক বয়সে পারস্য থেকে বেরিয়ে পড়ে, আর সেই সত্যকে সাথে নিয়ে তিনি বৃদ্ধ বয়সে পারস্যে ফেরেন বিজয়ের বেশে! আর এজন্যই বলছি নিঃসন্দেহে আল্লাহ আন্তরিক কোন মানুষকে কখনোই ফিরিয়ে দেন না।

রেইনড্রপস মিডিয়া প্রকাশিত সিরাহ সিরিজের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে পাক-ইসলামী যুগে তাওহীদের অনুসারী - হুনাফাদের গল্প।

Post a Comment

0 Comments